নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক : ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট। সদ্য করোনা আবহ কাটিয়ে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে মানবজীবন। কিন্তু নিত্যদিন যে হারে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে তাতে সংসার চালানো দায় হয়ে উঠেছে। এবারের বাজেট কতটা জনমুখি হবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন কোন খাতে কত বরাদ্দ করছেন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কতটা কমছে তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। তবে সমাজের যারা প্রান্তিক মানুষ তাদের কাছে বাজেট নিয়ে আলোচনা করার সময়টুকুও নেই। কর্মই তাদের প্রধান অস্ত্র। একদিন কাজ না করলে সংসারে পড়বে টান। এই কথা ছাড়া অন্য সবকিছুই তাদের কাছে বিলাসিতা। শহর কলকাতায় বিভিন্ন প্রান্তে সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে ওরা কাজ করে চলে। নারকেল ডাঙ্গা রোডে প্রায় ৩০ বছর ধরে জামা-কাপড় ইস্ত্রি করে সংসার চালান সঞ্জয় রাজা। একালায় সঞ্জয় ইস্ত্রিওয়ালা নামে পরিচিত। মূলত তিনি বিহারের বাসিন্দা। পরিবার সেখানেই থাকে। ৬ জনের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষ সঞ্জয়। রুজিরুটির দায়ে পরিবার ছেড়ে শহর কলকাতায় পড়ে থাকতে হয় তাতে। বাজেট নিয়ে আলাদা করে কোনও আগ্রহ না থাকলেও জিনিসপত্রের দাম কমলে সংসারটা ভালো করে চলে বলেই তার বক্তব্য ।
নারকেল ডাঙ্গা রোডেরই আর এক বাসিন্দা জগন্নাথ সাউ। আয়ের উৎস বলতে আছে একটি গুমটি দোকান। সেখান থেকে যা আয় হয় তাতেই চলে সংসার। নিত্যদিন মূল্যবৃদ্ধি চাপে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে বলে মত তার।
অন্যদিকে দক্ষিণদাড়ি একালার বাসিন্দা রামধার প্রজাপতি। আসল বাড়ি ইউপি তে হলেও তিন পুরুষ ধরে কলকাতাতেই তাদের বাস। পেশায় তারা মৃৎশিল্পী। মূলত চা খাওয়ার মাটির ভাঁড় তৈরি করেন তারা। এতটাই ব্যস্ত পঞ্চাশ উর্ধ্ব প্রজাপতি যে দুদন্ড কথা বলার ফুরসৎ তার নেই। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে একটুকুও সময় নষ্ট মানেই সংসারে টান। বাজেট নিয়ে তেমন আগ্রহ তার নেই। তবে জিনিসপত্রের দাম ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হয়ে থাকায় টান পড়ছে সাংসারে বলে জানান তিনি।
২০২৪ এ লোকসভা নির্বাচন। তাই এই বাজেট অনেকটাই জনমুখি বাজেট হবে বলেই মত অর্থনীতিবিদদের।