Date : 2024-04-26

উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের কখনোই যোগব্যায়াম ,শরীরচর্চা এবং এনসিসির মতন গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনিং থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ কখনোই বঞ্চিত করতে পারে না: হাইকোর্ট

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক:- বাম আমলেও এনসিসি করতে কোন বাধা ছিল না কিন্তু রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর স্কুলে কোনভাবেই এনসিসি করা যাবে না স্কুল পরিচালন কমিটির ফরমান জারি করে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার দেশের সমস্ত রাজ্য সরকার গুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল যে প্রতিটি স্কুলে এনসিসি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের শরীর চর্চার উপর জোর দিতে হবে।

হুগলির ভদ্রেশ্বরের তেলনিপাড়া ভদ্রেশ্বর হাইস্কুলে ২০০৮সাল থেকে এনসিসির ট্রেনিং ভালো ভাবেই চলছিল। বাদ সাধে ২০১১সালের সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে। তারই মধ্যে কেন্দ্রের সরকার পরিবর্তন হলো।কেন্দ্রের সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর মোদি সরকার যোগব্যায়াম শারীর শিক্ষা স্বাস্থ্য সচেতনতার উপর ও জোর দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছিল।

এই মর্মে সমস্ত রাজ্য গুলিতে নির্দেশিকা পাঠায় কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। পশ্চিমবঙ্গেরকেও সেই নির্দেশিকা কেন্দ্রের তরফে পাঠানো হয়েছিল। যে সমস্ত স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে যোগব্যাম শরীরচর্চা এবং এনসিসি করা বাধ্যতামূলক ।

এরাজ্যে সমস্ত স্কুলগুলিতেই ছাত্র-ছাত্রীরা শরীর চর্চা এবং এনসিসি চালু করলেও হুগলির ভদ্রেশ্বরের তেলনিপাড়া ভদ্রেশ্বর হাই স্কুলে এনসিসি করা নিষিদ্ধ! এমনই স্কুল কর্তৃপক্ষের তরপে অলিখিত ফরমান জারি করা হয় বলে অভিযোগ।

কেন্দ্রের এই ফরমান রাজ্যের বেশ কিছু স্কুলে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এনসিসির ট্রেনিং দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করে। যার মধ্যে অন্যতম তেলনিপাড়া ভদ্রেশ্বর হাই স্কুলে রয়েছে।স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন কমিটির সিদ্ধান্ত নেয় এনসিসির কার্যক্রম ২০১৬ সালে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয় ।এবং এই স্কুলে এনসিসির শিক্ষক দিব্যেন্দু বিশ্বাস বারবার আবেদন করেও স্কুল কর্তৃপক্ষএবং ডি আইকে। তাতেও টনক নড়েনি স্কুল কর্তৃপক্ষের।

স্কুলের সমস্ত অভিভাবকরাএবং এনসিসির শিক্ষক স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং হুগলির স্কুল পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে সেই অভিযোগ পেয়ে ডি আই স্কুল স্কুলকে নির্দেশ দিলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ এনসিসির প্রোগ্রাম চালু করতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। ছাত্র-ছাত্রীদের সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবেই এনসিসির শিক্ষক দিব্যেন্দু বিশ্বাস কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

মামলা শুনানি পর্বে মামলাকারী দিব্যেন্দু বিশ্বাসের পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী আদালতে অভিযোগ করেন ২০০৮ সাল থেকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের যোগব্যায়াম ,শরীরচর্চা এবং এনসিসির ট্রেনিং হয়ে আসছিল। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পরিচালন কমিটির উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের এই সমস্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করে রেখেছেন। করোনা মহামারীর জন্য গত দু’বছর স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে পড়েছিল। গৃহবন্দী হয়েছিল স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক হয়েছে। স্কুল-কলেজ ও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলেও তেলনি পাড়া ভদ্রেশ্বর হাই স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের শরীরচর্চা এবং এনসিসি ট্রেনিং থেকে বঞ্চিত করে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি অবিচার করছেন।

বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি কে কলকাতা হাইকোর্টের তলব করেন। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশ পালন করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং তারা আদালতেও হাজিরা দেননি।
বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন হুগলির স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশ মেনে অবিলম্বে স্কুল কর্তৃপক্ষ অতি শীঘ্র এনসিসি চালু করবে।