Date : 2024-04-28

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দপ্তরকে জানিও মেলেনি কোন সুরাহা! সিবিআইকে নোটিশ ইস্যুর নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়,সাংবাদিক : ২০১৮ সালের ৩০শে অক্টোবর মালদা কালিয়াচক আবাসিক মিশনের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী নাজিমা খাতুন। হোস্টেলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্নহত্যা করে বলে কতৃপক্ষের দাবী।এই ঘটনার কথা স্কুলেরই এক অভিভাবকের মারফত জানতে পারেন ছাত্রীর বাবা। খবর পাওয়ার পরেই মালদা চাচোল থেকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছায় ছাত্রীর পরিবার। ততক্ষণের চিকিৎসক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়।

স্কুল এবং আবাসিক কর্তৃপক্ষের কাছে মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে কতৃপক্ষের তরফে জানানো হয় মেয়ে পাঁচতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কতৃপক্ষের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি ছিল। কারণ দেহের কোন অংশেই আঘাতের চিহ্ন ছিল না পাশাপাশি হাড়ে কোন আঘাত লাগেনি। মেয়েকে পরিকল্পনা করে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে অভিযোগে কালিয়াচক থানায় আবাসিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

আবাসিক কর্তৃপক্ষ এলাকার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত এবং যে কারণে পুলিশ ৩০৬ এবং ১২০ ধারায় মামলা রুজি করে বলে অভিযোগ পরিবারের। পুলিশের সহযোগিতায় বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত জামিনে যেমন তারা ছাড়া পেয়ে যান এবং বেশ কয়েকজন নিরুদ্দেশ হয়ে যান। পুলিশ নিম্ন আদালতে চার্জশিটে উল্লেখ করেছিল।

মেয়ের মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরে ও আবেদন জানিয়েছিল কিন্তু সেখান থেকেও কোন সুরাহা পাইনি। নিম্ন আদালতের রায়ের পুনঃ বিবেচনার আর্জি মঞ্জুর করে মালদা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। যদিও নিম্ন আদালত পুলিশকে দিয়েই তদন্তের নির্দেশ দেন।সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন নাজিমুল হক।মেয়ের রহস্য মৃত্যুর ৫ বছর কেটে গেলেও এখনও মেলেনি সুবিচার, অবশেষে হাইকোর্টের দ্বারস্থ।

মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী আদালতে জানান যে একজন মানুষ যদি পাঁচ তলা ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে তাহলে তার শরীরের হার আস্ত থাকে না কিন্তু ময়না তদন্তে রিপোর্টে সেরকম কিছুই উল্লেখ নেই। শুধু তাই নয় রিপোর্টে কোথাও বোন (হাড়ে আঘাত) ইনজুরি ছিল না বলেও উল্লেখ করা হয়। এবং শরীরের কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না। স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় তার বাবাকে জানায়নি এবং এই ঘটনার পরে অনেকক্ষণ ছাত্রী জীবিত অবস্থায় ছিল তা সত্ত্বেও তার মৃত্যু কালীন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আইনজীবীর।

সেদিনের ঘটনা যে ব্যক্তি মৃতের বাবাকে ফোনে জানিয়েছিলেন ঘটনার কথা তার সাক্ষীও পর্যন্ত নেয়নি পুলিশ তাহলে সেই পুলিশের উপর আবার তদন্তের ভরসা করা যায় না। সন্দেহের কারণ ঘটনার আগের দিন ছাত্রীর বাবা স্কুলে দেখা করতে যায় দিদি এবং তাঁর ভাইয়ের সাথে। ছেলে এবং মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য আবাসিক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল তার বাবা। কিন্তু আবাসিক কর্তৃপক্ষ তার ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও ১৬ বছর বয়সে মেয়েকে কোন এক অজ্ঞাত কারণে আটকে দেয়। এবং সেই রাতেই এই ঘটনা ঘটেছিল।

বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল রাজ্য সরকার এবং সিবিআইকে নোটিশ ইস্যুর নির্দেশ দেন।

আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি।