সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক: এপ্রিলেই পশ্চিমবঙ্গের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি। কোনও কোনও জেলায় ৪৫ ডিগ্রিও ছুঁই ছুঁই তাপমাত্রা। সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্তাপ বাড়ছে। বাড়ছে জলস্তর। জলবায়ু আমুল পরিবর্তনে চিনের অর্ধেকের বেশি শহর তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। যেকোনও দিন বাসস্থানহীন হতে পারে কোটি কোটি মানুষ। ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে চিনের যে শহরগুলিতে জনসংখ্যা ২০ লক্ষেরও বেশি, সেই শহরগুলি দ্রুত হারে মাটিতে বসে যাচ্ছে বলে একটি গবেষণায় দেখা গেছে। মাটির নীচের জল শোষণ করে বড় বড় আকাশছোঁয়া কমপ্লেক্স, আবাসন তৈরি হচ্ছে। বড় বড় টাওয়ার, শপিং কমপ্লেক্স তৈরির কারণেই বসে যাচ্ছে মাটি। ইতিমধ্যেই গার্ডেনরিচ, নিউটাউন এমনকী মানিকতলাতেও দেখা গেছে বাড়ি বসে যাচ্ছে, কোথাও আবার হেলে পড়েছে বহুতল। সেই চিত্র শুধু এদেশে নয়, জিনপিংয়ের দেশের চিত্রটাও একই রকম। বেজিং, তিয়ানজিনের মতো জনবহুল শহর ক্রমশ বসে যাচ্ছে। আগে যেখানে প্রতি বছর ৩ মিলিমিটার পর্যন্ত মাটি বসে যাচ্ছিল, সেখানেই চিনের ৪৫ শতাংশ শহরতলি দ্রুতগতিতে ডুবে যাচ্ছে। বেজিংয়ের সাবওয়ে ও হাইওয়েগুলি প্রতি বছরে প্রায় ৪৫ মিলিমিটার করে বসে গিয়েছে। যত উচু বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে, ততই ধসে যাচ্ছে মাটি। নগরোন্নয়ণের কারণে নগরসভ্যতাই বিলুপ্ত হতে বসেছে। তবে শুধু চিন নয়, সঙ্কটে রয়েছে ভারতের কলকাতা, দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো শহরগুলিও। আর মাত্র ৩১ বছর। তারপরই ডুবে যাবে কলকাতা। ভেসে যাবে মুম্বই। সমুদ্রের জলস্তর বিপদসীমা ছাড়াবে। নিউ ইয়র্ক থেকে সাংহাই, উপকূলবর্তী শহরগুলো নিয়মিত বন্যার কবলে পড়বে। বিশ্বের উপকূলবর্তী শহরগুলিকে গ্রাস করবে পাহাড় প্রমাণ ঢেউ। পৃথিবীর মানচিত্র থেকে চিরদিনের মতো হারিয়ে যাবে দক্ষিণ ভিয়েতনামের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যনগরী হো-চি মিন সিটি, চিনের সাংহাই, থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক, ভারতের কলকাতা, মুম্বই, মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া. ইরাকের বাসরা। নাসার শাটল রেডার টোপোগ্রাফি মিশন তাদের উপগ্রহ চিত্রে দেখেছে ভারতের উপকূলবর্তী এলাকাগুলির মধ্যে সবচেয়ে আগে বিপর্যয় ঘনিয়ে আসবে কলকাতা, মুম্বই এবং গুজরাটে। পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে এই শহরগুলির। ক্ষতিগ্রস্থ হবে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ।