স্মৃতি বিশ্বাস : বাড়ি নিয়ে কম বেশি আবেগি আমরা অনেকেই। তা বলে বলে এমন আবেগ। শুনলে আপনিও চমকে উঠবেন। যা কিছু হয়ে যাক বাড়ি আমি ছাড়ব না।এই সিদ্ধান্ত থেকে কিছুতেই সরানো যায়নি তাদের। এমনকি সরকার বা নামি দামি বিল্ডার্স কেউই এদের টলাতে পারেনি।
জেদি বাড়ির মালিকের তালিকায় প্রথমেই বলি ইয়াং-এর কথা। চিনের ইসেনসিটিতে চিন সরকার হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করতে চায়। তার জন্য যে জায়গাটি নির্ধারণ করা হয় তার মধ্যে ছিল ইয়াং-এর 3 তলা বাড়িটি। ইয়াং-এর সব প্রতিবেশী সরকারের দেওয়া শর্ত মেনে পুনর্বাসন নিয়ে চলে যায়। কিন্তু ইয়াং, সরকারকে আদালত পর্যন্ত নিয়ে যান তবু বাড়ি ছাড়েননি। এরমধ্যে তাঁর বাড়ির বিদ্যুত্, জল সরবরাহ সব কেটে দেওয়া হয়। তবু ইয়াং দমে যাননি। 2বছর পর আদালত ইয়াং-এর পক্ষে রায় দেয়। বাধ্য হয়েই তখন সরকার তার বাড়িটি অক্ষত রেখে হাইটেক সিটির কাজ শুরু করে।
এবার আসি লুয়া বাউজেনের কথায়। তিনিও এক জেদি বাড়ির মালিক। ঝাঁ চকচকে বড় রাস্তার মাঝে মাথা উঁচু করে একা দাড়িয়ে আছে লুয়া বাউজেনের আপার্টমেন্ট। চিন সরকার একটি বড় রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করে, সেই রাস্তার রুটের মধ্যে পরে এই আপার্টমেন্টটি। আশপাসের সকলেই সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণ নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেও লুয়া বাউজেন কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন। বাড়ি তিনি ছাড়বেন না। হাজার আইনি লড়াই-এর পর অবশেষে মাথা নত করতে বাধ্য হয় চিন সরকার। লুয়া বাউজেনের বাড়িটি অক্ষত রেখে বাধ্য হয়ে সরকার রাস্তা তৈরি করার রুট নির্ধারণ করে।
এবার আসি এক বাড়ির জেদি বৃদ্ধার কথায়। নাম তার মেসফিল্ড, হয়স 84 বছর। আমেরিকার ওয়াশিংটনের সিয়াটেলে বিলাশবহুল শপিংমলের মাঝে তার বাড়িটি আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে স্বমহিমায়। যেখানে তিনি একায় থাকতেন। শপিংমল তৈরির সময় বিল্ডার্স কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁকে 1 মিলিয়ন ডলার অফার করা হলেও তিনি তাঁর সাধের বাড়িটি ছাড়েননি কোনওভাবেই।এরপর বিল্ডার্স কতৃপক্ষ তাঁর বাড়িটি মলের মাঝে অক্ষত রেখেই শপিং মলটি তৈরি করেন। তবে 2বছর পর মেসফিল্ড অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি তার বাড়িটি মৃত্যুর পর শপিং মলকে দান করার উইল করে যান। যদিও তাঁর মৃত্যুর পর কর্তৃপক্ষ তাঁর বাড়িটির কোনও ক্ষতি করেনি। একই অবস্থায় হেরিটেজ হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে মেসফিল্ড হাউজ। মলে আসা মানুষজন এখন মেসফিল্ড হাউজের সামনে সেল্ফি তুলে নিজেদের ধন্য মনে করে।
একেই বোধহয় বলে হোম সুইট হোম…..