সঞ্জু সুর,সাংবাদিক:- আমফান-এর ‘আফটার এফেক্ট’ কি হয়েছিলো তা আমাদের মনে এখনও সতেজ। বিশেষ করে শহর কলকাতার মানুষ। ঝড়ে ইলেকট্রিক তারের উপর গাছ পড়ার ফলে একাধিক এলাকা দীর্ঘদিন বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছিলো। অবস্থা এমন হয়েছিলো যে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করার সময় বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আগে থেকেই তৈরি রাজ্য সরকার, কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর।
কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ঝড় চলাকালীন সময়ে শহর কলকাতার সব ত্রিফলা বাতিস্তম্ভে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে, যাতে ঝড় বা ঝড়ো হাওয়ায় বাতিস্তম্ভ পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা না ঘটে। এবার বিদ্যুৎ দফতরের পক্ষ থেকেও আপৎকালীন ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ১০ মে থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত আগামি ছয় মাসের জন্য (যেহেতু এই সময়কালেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি দেখা যায়) একটি আলাদা কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের নম্বর ৮৯০০৭৯৩৫০৩ ও ৮৯০০৭৯৩৫০৪। ঝড়-বৃষ্টিতে কোথাও কোনো বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেলে, ট্রান্সফরমার বিকল হলে বা কোথাও বিদ্যুতের পোল পড়ে গেলে সরাসরি এই দুই নম্বরে ফোন করে বা হোয়াটসঅ্যাপ করে জানানো যাবে।
এদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড় অশনি কে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই জেলাপ্রশাসনগুলোকে সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুই ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলাকে নবান্নের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলার ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে যে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে সেখান থেকে প্রতিনিয়ত পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। উপকূলবর্তী নিচু এলাকার মানুষ কে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে আসার কাজ চলছে। দক্ষিণ বঙ্গের জেলাগুলোতে মোট বারোটি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল মোতায়েন করা হয়েছে। তারমধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, কলকাতা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ২ টো করে এনডিআরএফ দল ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলী ও নদিয়া জেলায় ১ টি করে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় অশনি-র সরাসরি প্রভাব এই রাজ্যে না পড়লেও নিজেদের প্রস্ততিতে কোনো খামতি দিতে রাজি নয় নবান্ন। তাই এই ব্যবস্থা।