Date : 2024-05-04

কোল্ড ড্রিঙ্কস ফুচকা বা গুড়ের ফুচকা কি খেয়েছেন কখনও? তা নিয়ে রইল বিশেষ প্রতিবেদন।

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক : কলকাতার মুখরোচক বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম ফুচকা। নাম শুনলেই, জিভে জল আর রোখা যায় না। অনেকেরই দুর্বলতার নাম এই ফুচকা। শরীরের জন্য উপযোগী হোক বা না হোক মন ভরাতে এর ঝুড়ি মেলা ভার। রাস্তার মোড়ে ফুচকাওয়ালাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ফাউ চাওয়ার আনন্দও যেন এক অনন্য অনুভূতি এনে দেয়। বয়স, সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সকলের একটাই পছন্দ। কিন্তু তাতেও আছে রকমফের। ভ্যারাইটির যুগে ফুচকার রকমারি সমভার। ভ্যারাইটি ফুচকার মধ্যে এবার সংযোজন হয়েছে কোল্ড ড্রিঙ্কস এবং গুড়ের ফুচকা।

পানিপুরি, গোলগাপ্পা, এক-এক শহরের এক-এক নাম। স্বাদও হরেকরকম। তবে বাংলায় আমরা একে ফুচকা বলেই চিনি। বাঙালির কাছে এই ফুচকা একটা আবেগ। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব কিছুর যেমন পরিবর্তন হয়েছে, তেমনই পরিবর্তন হয়েছে ফুচকার স্বাদেও। একই ছাদেরতলায় যদি হরেকরকমের ফুচকার স্বাদ পাওয়া যায় তাহলে মন্দ হয় হয় না। সেই খোঁজেই বালিগঞ্জের বিবেকানন্দ পার্কের পিছনে মিলল একটি ফুচকার দোকান। তিন প্রজন্ম ধরে চলে আসা এই দোকানের বর্তমান কর্ণধার দিলীপ সাউ।

অন্যান্য ফুচকার দোকানের থেকে কিছুটা আলাদা এই ফুচকার দোকান। আলাদা কেন? প্রশ্ন উঠছে তো মনে? দিলীপবাবুর ফুচকার দোকানে রয়েছে স্যানিটাইজার। প্রতিটি ফুচকা প্রেমিদের হাতে ফুচকা দেওয়ার আগেই দেওয়া হয় এই স্যানিজাইজার। তবে এখানেই শেষ নয়৤ রয়েছে বিশুদ্ধ জলও। এই জল দিয়েই ফুচকা পরিবেশন করা হয়। কেবলমাত্র কোভিড পরিস্থিতির জন্য এই ব্যবস্থা নয়। স্বাস্থ্যসচেতন দিলীপবাবুই ফুচকার দোকানে প্রথম পরিশোধিত জল ব্যবহার করেন। ১৯৮৮ সাল থেকেই ব্যবহৃত হচ্ছে এই জল। সাথে ১০ বছর ধরে স্যানিটাইজারও ব্যবহার করা হচ্ছে। কে জানত এই কোভিড পরিস্থিতিতে এই সতর্কতা কাজে লেগে যাবে? দিলীপবাবু আগে থেকেই সচেতন ছিলেন তাঁর ক্রেতাদের নিয়ে।

“বাসনার সেরা বাস রসনাই” আর তাই- ডাবের জলের ফুচকা, ম্যাঙ্গো ফুচকা, স্ট্রবেরি ফুচকা, পাইনাপেল ফুচকা, চিস ফুচকা, চকোলেট ফুচকা, বাটারস্কোচ ফুচকা, রাবরি ফুচকা, আলুরদম ফুচকার নামের তালিকায় যেমন আছে এবারে সংযোজন হয়েছে কোল্ড ড্রিঙ্কস ফুচকা। এবং শীতের কথা মাথায় রেখেই গুড়ের ফুচকা পাওয়া যাচ্ছে। এতো ফুচকার রকমারি যা মুখে বলে শেষ করা যাবে না। এমনকি ননভেজ ফুচকাও পাওয়া যায় তাঁর কাছে। সেই তালিকায় রয়েছে ইলিশ, পমফ্রেট, চিকেন ও চিংড়ির ফুচকাও। অনলাইনে অর্ডারও করা যাবে। এক ডাকেই দিলীপবাবুর ফুচকা বললে লোকে দেখিয়ে দেবে দোকান। দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই আসেন দিলীপবাবুর বানানো ফুচকা খেতে। সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে সেলিব্রিটি স্টেটাস পেয়েছেন দিলীপবাবু। তার তৈরি ফুচকার চর্চা এখন ভাইরাল, সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই ফোন করে আসছেন তাঁর তৈরি ফুচকা খেতে। এমন অনেকেই আছেন যারা দীর্ঘদিন ধরে ফুচকা খাচ্ছেন কেবল দিলীপবাবুর দোকানেই। এমনকি দিল্লীবাসী একজন ফুচকা প্রেমি তিনি দিলীপবাবুর ফুচকা খেতেই কলকাতায় এসেছেন।
দিলীপবাবু একটা ডাইরি মেইন্টেন করেন। যারাই দিলীপবাবুর কাছে ফুচকা খেতে আসেন তাদের নাম ও সই থাকে ওই ডায়েরিতে। বিভিন্ন নামকরা মানুষদেরও সই আছে ওই ডায়েরিতে। এটা দিলীপবাবুর সখ বলা যেতেই পারে। তাই ফুচকা দিয়ে রসনাতৃপ্তি আর ডায়েরির পাতায় স্বাক্ষর রেখে অন্তরের তৃপ্তি কোথাও যেন মিলেমিশে একাকার দিলীপবাবুর মহারাজা চাট সেন্টারে।