Date : 2024-05-11

কলকাতা পুরসভায় জলাশয় ভরাট নিয়ে তীব্র ভৎসনা KMC কে

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : কলকাতা পুরসভা জানে না কোথায় কত জলাশয় রয়েছে? এটা হতে পারে? কলকাতা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার যদি বলেন কতগুলো কোর্ট রুম রয়েছে জানি না

আমরা প্রস্তরযুগে বাস করছি না। সব কিছু ডিজিটাইজড করা উচিত। পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে এটা আশা করা যায় না। কী ভাবে জলাশয় রক্ষা করা হচ্ছে। প্রত্যেক দিন নতুন নতুন করে সমস্যা তৈরি হচ্ছে কেন?

জলাশয় অন্য কেউ ব্যবহার করছে। পাট্টা দেওয়া হয়েছে। বেআইনি নির্মাণ করা হচ্ছে। আবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হবে। আপনাদের কাছে জলাশয় নিয়ে তথ্য থাকা উচিত। কতগুলি জলাশয় ছিল। এখন সেগুলির কী অবস্থা পুরসভার তা পরিদর্শন করে দেখা উচিত।

রাজ্য: পুরসভা পদক্ষেপ করছে। এক হাজারের বেশি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুরসভা বেআইনি কোনও কিছুর অনুমতি দেয়নি। এফআইআর দায়ের সমস্যা সমাধানের রাস্তা নয়। পুরসভা কেন বেআইনি নির্মাণ ভাঙছে না?

বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কী করেছেন রিপোর্ট দিন। রিপোর্ট দিয়ে জানান কতগুলি বেআইনি নির্মাণ ভেঙেছেন। আদালতকে জানাতে হবে কতজনকে নোটিস ধরিয়েছেন।

২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পুরসভা হলফনামা দিয়ে জানায়,

১৯৯৩ সালে কলকাতা পুরসভা এলাকায় ৩৭৯০টি জলাশয় ছিল। ১৯৯৭ আরও কিছু জলাশয় তৈরি করা হয়। তার পর জলাশয় নতুন কোনও তথ্য পুরসভার কাছে নেই।

প্রত্যেক রিপোর্ট বলছে জলাশয়ের পরিবেশ পরিবর্তন করা হয়েছে।

২০১৪ সাল থেকে মামলা চলছে। শুধু সময়ের অপচয় হচ্ছে। এ ভাবে চলতে পারে না। পুরসভার সংশ্লিষ্ট অফিসারদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করবে আদালত। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। মনে হচ্ছে এটাই সঠিক প্রক্রিয়া হবে। গত দু’বছরে হাই কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি। আদালতের সঙ্গে শুধু প্রতারণা করা হচ্ছে। এটা আসলে ১০০ শতাংশ চক্রান্ত।

প্রায় চার হাজার জলাশয় বন্ধ করা হয়েছে। কমপক্ষে তিন হাজার মামলা দায়ের হয়েছে। তার পরেও আদালত চুপ করে থাকবে। তা হলে আমরা পুরসভা ভেঙে দিচ্ছি। বিশেষ অফিসার নিয়োগ করছি। তিনি পদক্ষেপ করবেন। সমস্ত চক্রান্ত শেষ হয়ে যাবে।

আদালতের পর পর তিনটি নির্দেশ সত্ত্বেও কলকাতায় পুরসভা এলাকায় কতগুলি জলাশয় রয়েছে তা জানাতে পারেনি পুরসভা।

৯ নভেম্বর ২০২২ রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। আজ পর্যন্ত সেই রিপোর্ট জমা পড়ল না। যদিও পুরসভা বার বার বলছে, পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জলাশয় চিহ্নিত করা হচ্ছে। কিন্তু সব খতিয়ে দেখে পুরসভার অবস্থান আদালতের কাছে স্পষ্ট নয়।

২০২১ সালের পর থেকে জলাশয় নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি পুরসভা। ওই জলাশয়গুলি নানা ভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। অথচ পুরসভা চুপ করে থেকে মামলা দীর্ঘায়িত করতে চায়।

পুরসভা বলছে আগামী শুনানিতে তারা রিপোর্ট জমা দেবে। কিন্তু আদালত তাদের প্রতি আস্থা হারিয়েছে। কারণ এর আগেও তারা আদালতের নির্দেশ মানেনি। তাই পুরসভা যদি ১ লাখ টাকা জরিমানা জমা দেয়। তবেই আদালত হলফনামা জমা নেবে।

নির্দেশ কার্যকর করাতে আমি জানি। অন্য কোথায়

প্রত্যেকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে ছাড়ব। ২০২০ সাল থেকে কারা একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং কাউন্সিলদের নামে পদক্ষেপ করব। প্রত্যেককে আদালতে ডেকে পাঠাব। কেউ বাধা দিতে পারবে না।

কী করে ভাবলেন একটা জলাশয়ের উপর সাততলা ভবন নির্মাণ হয়ে গেল আর স্থানীয় ইঞ্জিনিয়ার তা জানেন না? এটা কী ভাবে হয়?

গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে এখানে রয়েছি। অনেক কিছু জানি। রাত সাড়ে ১১টা

মাননীয় মহাশয়কে গিয়ে বলুন আদালত এটাকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নিয়েছে। অনেক কিছু হচ্ছে মেয়রকে বলুন। এটার শেষ দেখে ছাড়ব।

আপনাদের কাজের জন্য পরবর্তী প্রজন্ম ভুক্তভোগী হবে।

যদি শহরে প্রচুর জল থাকত, কিছু বলতাম না। একটা জলের জার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই কখনও কাউকে পদক্ষেপ করতেই হবে। জানি ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। ক্ষমতায় আসতে হবে। কিন্তু কিছু তো করতে হবে।

রাজ্য সরকার বলছে, আলু উৎপাদনে সেরা। আমরা জানি ৬০ শতাংশ মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে করা হয়। কিন্তু দিনের শেষে বলতে হবে বাকি মামলাগুলি ঠিকঠাক। কিছু তো হয়েছে।

আমাদেরকে কি সব বলতে হবে।

১৯ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি।