সঞ্জু সুর, সাংবাদিক ঃ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে বড় খোলসা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দলীয় সাংসদ, বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক বলেন, “এবারের ভোট হবে প্রতিরোধের ভোট, প্রতিশোধের ভোট।”
লোকসভা নির্বাচন নিয়ে একদিকে যেমন নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে, ঠিক তেমনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও তাদের প্রস্তুতি সেরে ফেলছে। তৃণমূল কংগ্রেস ও সেই লক্ষ্যেই শুক্রবার দলের সব সাংসদ, বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করলো। বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মানুষ ধর্মের নামে একবার ভোট দিয়েছে। এবারে আর দেবে না।” তিনি আরো বলেন, “আমার ধারণা মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। নির্বাচন ঘোষণা হলে তখন আমি আরেকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করবো। আমাদের প্রচার কর্মসূচি কেমন কি হবে তখন জানাবো।” পঞ্চায়েত নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি বলেছিলাম পঞ্চায়েতে ধর্মের নামে ভেদাভেদী নয়, বিজেপির জুলুমবাজি নয়। আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাজ দেখে ভোট দিন। সেই পঞ্চায়েত নির্বাচনী প্রমাণ মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের কাজেই আস্থা রেখেছে।” এই উদাহরণ সামনে টেনে অভিষেক দলীয় নেতৃত্বদের কিছু কর্মসূচিও দিয়েছেন। কর্মসূচি নিয়ে অভিষেক বলেন, “১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যের ৩,৩৪৩ টি অঞ্চলে সহায়তা শিবির খোলা হবে। এই শিবির চলবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা দশটা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত শিবির খোলা থাকবে।” তৃণমূল বিধায়কদের প্রতি অভিষেকের নির্দেশ, এই আট দিন নিজেদের এলাকার প্রতিটা শিবির অন্তত দুইবার করে ভিজিট করবেন। সংসদদের প্রতি তৃণমূল সাংসদ অভিষেকের নির্দেশ, আপনারা নিজেদের এলাকার সাতটি বিধানসভার প্রতিটিতে অন্তত পাঁচবার করে ভিজিট করবেন। তবে যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের কোন বিধায়ক বা সাংসদ নেই সেখানে ব্লক সভাপতি বা অঞ্চল সভাপতিরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করি এটা করবেন। পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্নীতির ইস্যু থেকে মানুষদের নজর সরিয়ে নিজেদের দিকে টানতে জনসংযোগকেই আরও জোরদার হাতিয়ার করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই কারণে বুথ সভাপতিদের জন্য আলাদা করে কর্মসূচি দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, “বুথের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা আগামী ১৮ তারিখ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত নিজেদের এলাকার হাটে বাজারে ঘুরে বেড়ান। মানুষের কাছে যান। তাদেরকে বলুন, তাদের বোঝান তৃণমূল কংগ্রেস কিভাবে মানুষের দাবি নিয়ে গত দুই বছর ধরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে।” মানুষকে পাশে নিয়েই এই লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফলের আশায় অভিষেকের বক্তব্য, “এবারের ভোট শিক্ষা দেওয়ার ভোট অধিকার কাড়ার ভোট।”