Date : 2024-04-26

২ঘড়া জল আনতে ট্রেনে রোজ ১৪ কিমি পথ পাড়ি দেয় এই বালক

ওয়েব ডেস্ক: তীব্র দাবদাহে পুড়ছে উত্তর-পশ্চিম ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ। স্নান বা অন্যান্য কাজ তো দূরের কথা, গলা ভেজানোর এক ঢোক পানীয় জল পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তর ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে। ভরা বর্ষাকালেও আকাশে দেখা নেই এক টুকরো মেঘের। পানীয় জলের সন্ধান করতে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের বিস্তির্ণ অঞ্চলের মানুষের এখন অসহনীয় অবস্থায়। শুকিয়ে গেছে অধিকাংশ গ্রামের কুয়ো, প্রবল তাপপ্রবাহে ফুটিফাটা দেখা দিয়েছে চাষের জমিতে, বিপজ্জনক ভাবে নেমে গেছে ভূ-গর্ভস্থ জলস্তর।

আবহাওয়াবিদদের কথায়ও নেই আশারবাণী, কবে আসবে বৃষ্টি এই আশায় দিন গুনছে মানুষ। ঔরঙ্গাবাদ পুরসভাও এই অবস্থায় অসহায়, পানীয় জলের ব্যাবস্থা করার মতো কোন উপায় নেই তাদের কাছেও। অগত্যা গ্রামবাসীরা পানীয় জলের উৎস সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন কয়েক কিলোমিটার হাঁটা পথে। ঔরঙ্গাবাদের ১০ বছরের কিশোর সিদ্ধার্থ ধাগেও বাদ নেই এই জীবন যুদ্ধ থেকে। গরমের ছুটিতে কোথায় একটু বন্ধুদের সঙ্গে খেলবে সে, তার বদলে ক্লাস টু-এর সিদ্ধার্থকে দীর্ঘ ১৪ কিমি রেল পথে মুকুন্দওয়াদি স্টেশন থেকে পৌঁছে যেতে হয় ঔরঙ্গাবাদ সিটি স্টেশনে শুধুমাত্র ২ ঘড়া পানীয় জল আনতে।

যাতে পরিবারের মানুষ অন্তত এক ঢোক পানীয় জল পায়। শুধু তাই নয়, তার সঙ্গে একই অবস্থা তার বন্ধুদেরও। দুই ক্যান পানীয় জলের জন্য তাদেরকেও অপেক্ষা করতে হয় হায়দ্রাবাদ প্যাসেঞ্জারের জন্য। ঠাসাঠাসি ভিড় ঠেলে জীবনপণ করে আনতে হয় পানীয় জল। তীব্র গরমে ঔরঙ্গাবাদের প্রায় ৭০০০ গ্রামের মানুষের অবস্থা এমনই ভয়ানক। ঔরঙ্গাবাদ সিটি স্টেশনের কলই এখন তাদের পানীয় জলের একমাত্র উৎস। অধিকাংশ সময় ট্রেন দেড়িতে পৌঁছায় স্টেশনে।

আবার দুপুর গড়িয়ে বিকেলের আগে বাড়ি ফিরতে হয় জল নিয়ে। কারণ বিকেলের আগেই শেষ ট্রেন ছেড়ে যায় মুকুন্দওয়াদি স্টেশন। তারপর সারারাতে আর একটা ট্রেনও যায় না ওই পথে। সারাদিনে ওই একটি ট্রেনই তাদের ভরসা, জল আনার জন্য ট্রেন ধরতে না পারলে সেদিনের জন্য পরিবারকে একবিন্দু পানীয় জল হয়েতো মুখে তুলে দিতে পারবে না সিদ্ধার্থরা। ২ঘড়া পানীয় জল যেন সোনার থেকেও মূল্যবান এই পরিবারগুলির কাছে।