Date : 2024-05-01

৭৪ হাজার আসনে একা তৃণমূলের প্রার্থী প্রায় ৮৩ হাজার। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক ঃ পঞ্চায়েত নির্বাচনের তিনটি স্তরে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা গতকাল শেষ হয়েছে। প্রত্যাশিতভাবেই মনোনয়ন জমা দেওয়ার নিরিখে তৃণমূল কংগ্রেস এক নম্বরে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে বিজেপি ও সিপিএম। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের মোট মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রার্থীর সংখ্যায় চোখ আটকেছে অনেকের। প্রায় ৭৪ হাজার আসনে তৃণমূলের একার প্রার্থীর সংখ্যা (মনোনয়নপত্র জমার নিরিখে) প্রায় ৮৩ হাজার, যা স্বীকৃত আসনের থেকে প্রায় ৯ হাজার বেশি।

রাজ্যে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের তিনটি স্তরে মোট আসন সংখ্যা হলো ৭৩,৮৮৭ টি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৩,২২৯ টি আসন রয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতে। পঞ্চায়েত সমিতিতে আসন সংখ্যা ৯,৭৩০ টি, আর জেলা পরিষদে আসন সংখ্যা ৯২৮ টি। মনোনয়ন পর্ব শুরু হ‌ওয়ার পর প্রথম তিনদিন খুবই ঢিমেতালে ব্যাট করছিলো তৃণমূল কংগ্রেস। একটা, দুটো, চারটে, ছ’টা করে মনোনয়ন জমা পড়ছিলো তৃণমূল কংগ্রেসের। বিজেপি বা সিপিএম এমন কি কংগ্রেস ও কিছু কিছু জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে গিয়েছিলো। অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলো তৃণমূল কংগ্রেসের হলো টা কি ! কিন্তু স্ট্রাটেজি একটু আলাদাই নিয়েছিলো তৃণমূল। তাই চতুর্থ দিন থেকে চিত্রটা বদলাতে শুরু করে, আর পঞ্চম ও ষষ্ঠ দিনে তো একেবারে টি টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাট (বিরোধীদের অভিযোগ ব্যাট নয় উইকেট, বোমা ও গুলি) করে সোজা এক নম্বরে। কিন্তু গোল বেঁধেছে অন্য জায়গায়। যেখানে মোট আসন সংখ্যা ৭৩,৮৮৭ টি সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা পড়েছে ৮২,৮২৭ টি। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট ২,৩১,৩৯৪ টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। তৃনমূল কংগ্রেসের ৮২,৮২৭ টি বাদ দিলে বিজেপি মোট প্রার্থী দিয়েছে ৫৫,৫৪৬ টি, তৃতীয় স্থানে থেকে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে ৪৭,৭১০ টি ও কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ১৭,৩৭৬ টি আসনে। হাইকোর্টের নির্দেশে শুক্রবারেও বেশকিছু মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার কাজ চলছে। ফলে এই সংখ্যা কিছুটা বাড়বে। এদিকে নির্দিষ্ট আসন সংখ্যার বেশি আসনে কিভাবে মনোনয়ন জমা পড়লো এই প্রশ্নে কমিশনের এক আধিকারিকের বক্তব্য এটা হতেই পারে। অনেক সময় এইসব নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো ডামি প্রার্থীকে দিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়ে রাখে। প্রয়োজনে পরে প্রত্যাহার করে নেয়। এটা একটা কৌশল রাজনৈতিক দলগুলোর। এই প্রসঙ্গে তৃনমূল কংগ্রেসের এক জেলার নেতাও (এই নির্বাচনেও যিনি দলের পক্ষ থেকে দায়িত্বে রয়েছেন) প্রায় একই কথা বললেন। তাঁর মতে অনেক সময় মনোনয়ন পত্র জমা করার সময় কিছু ভুল হয়ে থাকতে পারে। স‌ই সাবুদ বা কাগজপত্রে ভুল হতে পারে। স্ক্রুটিনির সময় সেগুলো বাদ যায়। তাই একাধিক নাম জমা দেওয়া হয়। স্ক্রুটিনিতে যদি নাম বাদ না যায় তাহলে অতিরিক্ত প্রার্থীকে প্রত্যাহার করিয়ে নেওয়া হয়। এটাই অলিখিত নিয়ম। তাঁর আরও অভিযোগ, বিরোধী দলগুলোর এমনিতেই সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তার উপর ডামি প্রার্থী আর দেবে কি করে? তবে আগামি ২০ তারিখ মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্ব মিটে গেলে বোঝা যাবে সরকারিভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের মোট কতজন প্রার্থী লড়াইতে থাকলেন আর কতজন‌ই বা বিক্ষুব্ধ হয়ে লড়াইতে থেকে গেলেন।