Date : 2024-05-02

আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব বললেন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ।এটা রাজনৈতিক জনস্বার্থ বললেন সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক:- নেতা মন্ত্রীদের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে সুর ছাড়ালেন তৃণমূলের মন্ত্রী সাংসদরা।
রাজ্যের শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের হাজারগুণ সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে গত পাঁচ বছরে। যা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনসত্তাম আমলা দায়ের হয়েছিল ২০১৭ সালে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ সম্প্রীতি বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলায় ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ দেন।
কলকাতা হাইকোর্টে নির্দেশ দেওয়ার পরেই এই মুহূর্তে রাজ্য জুড়ে জোড়চর্চা রাজনৈতিক মহলে। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যখন ই ডি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী এবং তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে যেভাবে কোটিকোটি টাকা উদ্ধার করেছে তারপরে কলকাতা হাইকোর্টের এই পদক্ষেপ বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এমনটাই মনে করছেন কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী মহলের একাংশ।
তবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের 24 ঘন্টার মধ্যেই সড়ক হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যে ১৯ জনের তালিকা আদালতে জমা দিয়েছে মামলাকারী। তার মধ্যে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তিনি স্পষ্ট তো জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে ওটা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেবেন। মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আদালত সংক্রান্ত রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘আদালতের রায় নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে আমি তিনবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি।
প্রতিবারই হলফনামা দিয়েছি। যদি এর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিক কিছু দেখা যায়, তাহলে কেউ প্রমাণ করতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।

কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরেই সরব হয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় তিনি জানিয়েছেন এটা রাজনৈতিক জনস্বার্থে। শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলকেই টার্গেট করা হচ্ছে কেন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বলেন ‘যারা এই বিষয়গুলি ঘটাচ্ছেন তাদের ভাবতে হবে এটাকে সার্বিক চেহারা দেওয়া দরকার নাকি শুধুমাত্র বেছে বেছে ব্যাপারগুলো করা দরকার!’ তার প্রশ্ন, ২০১১ সাল এবং ২০১৬ সালে সম্পত্তির হ্রাস বৃদ্ধি নিয়ে শুধুমাত্র কেন একটিমাত্র রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে? সারা ভারতবর্ষে সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হোক। সেটা বিজেপি হোক বা কংগ্রেস হোক বা সমাজবাদী পার্টি। তবে বোঝা যাবে যে সত্যি সত্যি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। সুখেন্দুশেখর বলেন, ‘শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে তার মানে নিশ্চয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।

মামলাকারি সমাজকর্মী বিপ্লব কুমার চৌধুরীর আবেদনে জানানো হয়েছে,২০১১ সাল থেকে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তির হিসেবনিকেশ করে দেখা গিয়েছে, এক এককজনের সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে হাজার গুণ পর্যন্ত।সেই তালিকায় কে নেই? নাম শুনলেও অবাক হয়ে যাওয়ার মতো। গত দশ বছরের অনেকের সম্পত্তি বেড়েছে বলে অভিযোগ ।একনজরে দেখে নেওয়া যাক।কলকাতা হাই কোর্টে যে নামের তালিকা জমা পড়েছে তাঁরা কে কে?

২০১১সালে তৎকালীন যাঁরা যাঁরা মন্ত্রিপদে ছিলেন তাঁরা হলেন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক,আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক,উত্তর বঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, লোকসভার সাংসদ ইকবাল আহমেদ(প্রয়াত হয়েছেন) পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা,শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু,তৎকালীন অগ্নি নির্বাপন দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান,কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়,সিপিএম ছেড়ে আসা আবদুর রেজ্জাক মোল্লা,বন দফতরের তৎকালীন মন্ত্রী
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়,বিধায়ক তথা বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত
বিধায়ক শিউলি সাহা ,রাজ্যের প্রাক্তন অর্থ মন্ত্রী অমিত মিত্র এবং রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যা ছাড়াও নাম ছিল প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পান্ডে এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নামও।

কলকাতা হাইকোর্টের এহানো নির্দেশ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে যে বাড়তি অক্সিজেন যোগাচ্ছে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।