Date : 2024-04-26

তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জ্বলছে পৃথিবীর ফুসফুস, ৭ দিনে ৯,৫০০ বার আগুন…

ওয়েব ডেস্ক: তিন সপ্তাহ ধরে অনবরত জ্বলছে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ অ্যামাজন অরণ্য। আগুন যেন গো গ্রাসে গিলে ফেলছে ঘন সবুজ অরণ্য। অ্যামাজনে দাবানল হওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবে ২০১৯ সালে সেই পরিমান বহুগুন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগস্টে এখনও পর্যন্ত ৭৩ হাজার ৬৭৮ বার আগুন লেগেছে ব্রাজিলের অ্যামাজন জঙ্গলে। বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে এখনও ছড়িয়ে পড়ছে আগুন। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক পরিবেশের উপর বিশাল প্রভাব পড়তে চলেছে বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদরা।

এই ভয়াবহ আগুনে অ্যামাজন জঙ্গলে যে হারে সবুজ নিধন ঘটছে তাতে বিশ্বউষ্ণায়ণ ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে বলেই মনে করছে সমস্ত দেশগুলি। অ্যামাজনে আগুন লাগানোর জন্য অনেকে আবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের নীতিকে দায়ী করছেন। দেশের অভ্যন্তরেও অ্যামাজনের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। বনভূমি রক্ষা করতে অ্যামাজন সংলগ্ন অঞ্চলে বসবাসকারী বিভিন্ন উপজাতির মানুষ এগিয়ে এসেছে। আমেরিকান স্পেস এজেন্সির নাসা-র দাবি, অ্যামাজনের জঙ্গল পৃথিবীর মোট উৎপন্ন অক্সিজেনের ২০% উৎপন্ন হয়।

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আইএনপিএ জানিয়েছে, অ্যামাজনের জঙ্গল ধরে ইতিমধ্যেই ব্রাজিলের রোন্ডানিয়া, অ্যামাজোনাস, পারা, মাতো গ্রোসোর আংশিক অংশ আগুন গ্রাস করেছে। এই সংস্থার বক্তব্য, অ্যামাজনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্বাভাবিক হলেও এবার তা বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে গেছে। ইতিমধ্যে বনভূমির প্রায় অনেকাংশে বিধ্বংসী আগুন জ্বলছে। ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডে উদ্বিগ্ন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো অবশ্য সন্দেহ করছেন এনজিওগুলিকে।

তাঁর ধারণা, এনজিওগুলি অ্যামাজনের জঙ্গলে গিয়ে আগুন ধরাচ্ছে। কেন? প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, অর্থ অপচয় করায় বিভিন্ন এনজিওর ফান্ডিং কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই রাগে তারা গিয়ে রেইনফরেস্টে আগুন ধরাচ্ছে।

যদিও, তাঁর হাতে যে এ নিয়ে প্রমাণ কিছু নেই, তা স্বীকার করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যে ৪৪ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে ব্রাজিলের প্রতিরক্ষা দফতর। অগ্নিকাণ্ডে আটকে থাকা বহু জীবজন্তুকেও উদ্ধার করেছে ব্রাজিলের সেনাবাহিনী।

আগুন নিয়ন্ত্রণে দুইটি সি-১৩০ হারকিউলিস এয়ারক্রাফট ব্যবহার করছেন সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। এই এয়ারক্রাফটগুলি ১২ হাজার লিটার জল স্প্রে করছে অগ্নি বিধ্বস্ত বনভূমিতে। ব্রাজিলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফার্নান্দো আজেভেদো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তার কথা বললেও বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে কোনও সহায়তা দিচ্ছে না। শুক্রবার থেকে আকাশ পথে সুপার ট্যাঙ্কার নিয়ে শুক্রবার থেকেই ব্রাজিলের সেনা অগ্নি নির্বাপনের চেষ্টা করে চলেছে। শেষ পাওয়া খবরে এখনও পর্যন্ত সামান্য নিয়ন্ত্রণেই আনা গেছে অ্যামাজনের আগুন।